এম.লোকমান হোসাঈন।।
একটি ছেলে একটি মেয়েকে খুব ভালবাসে অথচ সে কোনো দিন মূখ খুলে বলতে পারেনি সেই ভালবাসার মানুষটিকে।
ভালবাসার মানুষটি ছিল তার একই স্কুলের সহপার্ঠী।
নাম তার মৌসমি আক্তার মৌ (ছদ্ম নাম), ছেলেটির নাম ছিল রিমন (ছদ্ম নাম), প্রতিদিন স্কুলে যাবার পথে মৌসমি আক্তার মৌ আর রিমন স্কুল ফাকি দিয়ে আবার কখনো কখনো স্কুল ছুটি হলে মামা বাড়ী,কাকাবাড়ী,ফুফুবাড়ীসহ আত্ময়ীস্বজনদের বাড়ীতে এবং শহরের বিভিন্ন বিনোদন স্থান গুলোতে ঘুরা-ঘুড়ি করে সময় পার করাই ছিল একধরনের নেশা।
কিন্তু মেয়েটিও ছেলেটিকে ভীষন ভালবাসে। বাসা থেকে প্রতিদিন স্কুলে যাবার পথে মনে মনে ভাবে আজ বলবই ভালবাসার কথাটা।
তবে কেউ কোনোদিন সরাসরি কাউকে বলতেও পারেনি।
একদিন “দু”দিন করে স্কুল জীবন শেষ করে ফেললো কিন্তু মনের ভালবাসার কথা আর বলা হলোনা।
ছেলেটি খুব চিন্তায় পরে গেলো আর বুঝি মেয়েটিকে পাবোনা কারন একদিন মেয়ের বাবা ছেলের বাবার কাছে মৌ’র বিয়েসাধীর বিষয় আলোচনা করতে দেখেছেন কিন্তু পরে কি কথা হয়েছে তা আর শুনতে পারেনি রিমন।
রিমন ধরে নিয়েছেন মৌসমির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তাই ওর বাবাকে দাওয়াত দিতে এসেছেন।
সেই থেকেই রিমন খুব চিন্তিতি ছিল মৌসমিকে দেখলে তাকিয়ে থাকতো।
একদিন হঠাৎ মৌসমি, রিমনকে জিজ্ঞাসা করলো রিমন তোমি কি কোনোদিন কোনো মেয়েকে ভালবাসছিলে?
রিমনঃ হুম..
মৌঃ কে সে তার নাম কি? সে কোথায় থাকে….
রিমনঃ কোনো জবাব না দিয়ে ওল্টো মৌসমিকে জিজ্ঞাসা করলো আচ্ছা তোমি কি কারো ভালবাসো?
মৌঃ হুম তবে সে আমাকে ভালবাসেনা…
রিমনঃ কে সে আমাকে বল আমি তার সাথে কথা বলে দেখি…..
মৌঃ না থাক……
মৌঃ আচ্ছা তুই যাকে ভালবাস ওকে দেখতে কেমন,আমার চাইতে অনেক সুন্দার তাইনা?
এসময় মৌসমি আক্তার মৌ আর রিমনের দুই চোখঁ দিয়ে জ্বর জ্বর করে পানি পরতে ছিল।
রিমনঃ আর কোনো কথা না বলে চলে গেলো।
কলেজ লাইভ…..
কিছুদিন পরে পরীক্ষা শেষ হলো শুরু হলো স্কুল লাইভ শেষ করে কলেজ লাইভ।
একি কলেজে ভর্তি হলেন দুইও জন।
তবে কেউ জানতো না তারা আবার দুইওজনে একি কলেজে ভর্তি হয়েছেন।
ছেলে এবং মেয়েটি কলেজে ভর্তি হলেও ক্লাসে ঠিক মত জাননা।একদিন হঠাৎ ক্লাসে বসে ছেলেটিকে দেখতে পেলেন।
ক্লাস শেষ করে ছেলেটি আবার চলে গেলেন। মেয়েটি এরপর থেকে নিয়মিত আবার ক্লাসে আশা শুরু করলেন। একদিন আবার দুইও জনার সামনে সামনি দেখা হলো ছেলেটি তখন জানতে পারলো তারা দুইও জন একই ক্লাসে আছেন।
তার পর থেকেই আবারও সেই স্কুল জীবনের মত কলেজে আসা যাও শুরু করলো।
শুরু হলো বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে আড্ডা বিভিন্ন বিনোদন মূলোক স্থানে ঘুরা-ঘুড়ি। দুইওজনি ছিলেন এক সাথে কিন্তু সেখানে কোনো দিন মূখ খুলে বলতে পারেনি নিজেদের সেই ভালবাসার মানুষটি কথা।
যখনি ছেলেটি মেয়েটি জানতে চাইত ছেলেটির ভালবাসার মানুষটির কথা তখনি অন্য কথা বলে এড়িয়ে যেত ছেলেটি।
আর যখন মেয়েটিকে প্রশ্ন করা হত তখন শুধু চোখেঁর জ্বল বের হতো আর কিছুই বলতো না।
ছেলেটি হঠাৎ কলেজ আসা বন্ধ করে দিল। পরে জানতে পারলো রিমন বিদেশ চলে গেছেন।
৭বছর পর ছেলেটি (রিমন) দেশে আসল ছেলেটির বাবা-মা আগে থেকেই একটি মেয়েকে পারিবারিক ভাবে পছন্দ করে রেখেছিল তাই সব কিছু আগে থেকেই ঠিক-ঠাক ছিল।
দেশে আসার পরে ছেলেকে নিয়ে মেয়েটির বাসায় যাবার জন্য ছেলে বাবা-মা বললে ছেলে অভিমান করে বললো তোমরা আমার জন্য যা ঠিক করে রেখেছো তাতে আমার কোনো আপত্তি নাই আমার যাওরা প্রয়োজন নাই তোমরা গিয়ে সব কিছু ঠিক করে আসো।
রিমনের বাবা-মা ছেলের এক কপি ছবি নিয়ে মেয়েকে দেখাতে যায় কিন্তু মেয়েটির বাসায় গিয়ে মেয়ের বাবা-মাকে তার ছেলে ছবি দেখতে বললে মেয়েও তাদের একই কথা বলে আমার দেখার প্রয়োজন নাই তোমরা যা ভাল মনে করো সেটাই করো?
এতে আমার কোনো আপত্তি নাই।
অবশেষে উভয় পরিবারের আলোচনার মাধ্যমে দিন তারিখ ঠিক করা হয়।
বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে মেয়েটিকে ছেলের বাসায় নিয়ে আসে কিন্তু মাত্র ৭বছরের ব্যবধানে কেউই কাউকে চিনতে পারেনি।
বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রী তাদের জীবনের গঠে যাও কিছু গল্প একে অপরকে বলতে ছিল।
এসময় জীবনের সবচাইতে কস্টের গল্প গুলো বলতে বলতে ছেলেটি স্কুল জীবন থেকে কলেজ জীবনে যে মেয়েটিকে পছন্দ করতো সে মেয়েটির কথা বলতে শুরু করলো।
একপর্যায় স্ত্রীঃ উঠে জিজ্ঞাসা করলো মেয়ে টির নাম কি ছিল?
স্বামীঃ মৌসমি আক্তার মৌ।
স্ত্রীঃ মেয়েটির বাড়ি কোথায়।
স্বামীঃ …….।
হঠাৎ স্ত্রী’র দিকে তাকিয়ে দেখে দুই চোঁখ দিয়ে পানি পরতে ছিলো।
স্বামীঃ কি হলো তুমি কান্না করছো কেনো?
স্ত্রীঃ আমি এতো নিষ্ঠুর?? আমাকে তুমি ক্ষমা করে দেও???
আমিই সেই মেয়েটি যিনি আমাকে এতো ভালবাসছিলে আর আমাকে একবার তুমি বলতে পারোনি…..।