স্টাফ রিপোর্টার ॥ পটুয়াখালী জেলার তৎকালীন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ১ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৫ টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগে বহিস্কৃত সেই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষের নতুন ষড়যন্ত্র। নিজেকে আড়াল রেখে সেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ঘায়েল করার মিশনে নামেন প্রকল্প কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ। কলাপাড়া উপজেলার সাবেক ও বর্তমানে বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো: মুনিবুর রহমানকে ফাঁসাতে নগরীর রুপাতলী এলাকার একটি ভূমিদস্যূ গ্র“পের সাথে আতাত করে দাখিল করা হয় অভিযোগপত্র।
সূত্র নিশ্চিত করে জানাগেছে, ভূমিদস্যূদের অভিযোগের ফাঁইল সাথে নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে, বরিশাল থেকে ঢাকায় যান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য আসে সময়ের বার্তা হাতে। উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো: মুনিবুর রহমানের অপরাধ, প্রায় ২০ কোটি টাকার সরকারী পরিতাক্ত সম্পত্তি উদ্বার করে সাইনবোর্ড টানানো। এজন্যই বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর একটি রম্য রচনা লিখে আল আমিন নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যার পেছনে বসে কলকাটি নাড়ছেন পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার বহিস্কৃত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ।
আশ্রয়ন প্রকল্পের ১০টি কমিউনিটি সেন্টার ও ছয়টি ঘাটলা নির্মাণের বরাদ্দ ছিল দেয়া হয় ১ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৫ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সারিকা ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারীর যোগসাজশে উপজেলার নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে বিলের ওই উত্তোলন করার বিষয়টি জানাজানি হলে নড়েচড়ে বসেন জেলা প্রশাসন থেকে বিভাগীয় প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আইনগত ব্যবস্থাও নেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আশ্রয়ন-২ প্রকল্প তেজগাঁও ঢাকা এর স্মারক নম্বর-০৩.০২.০০০০.৭০১.০২.০৯৬.১৯.১৩১৪। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চিঠিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ ব্যয় নির্বাহের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৫ টাকা।
কলাপাড়ার ফতেপুর, লক্ষ্মী বাজার, খাজুরা, চালিতাবুনিয়া, ছোট বালিয়াতলী, নিজশিববাড়িয়া, গোড়া আমখোলা, নিশানবাড়িয়া, নীলগঞ্জ ও গামুরিবুনিয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের জন্য প্রত্যেকটি কমিউনিটি সেন্টারের নির্মাণ ব্যয় বরাদ্দ দেয়া হয় ৯ লাখ ৮০ হাজার ১১৩ টাকা। এছাড়া গামুরি বুনিয়া ও নিশানবাড়িয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের দুটি ঘাটলা নির্মাণ ধরা হয় ব্যয় ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৩৫ টাকা। ফাসিপাড়া ও খাজুরা দুটি ঘাটলা নির্মাণ ব্যয় বরাদ্দ দেয়া হয় ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৩৫ টাকা এবং নীলগঞ্জ ও গোড়াআমখোলা পাড়া আশ্রয়নের দুটি ঘাটলা নির্মাণ ব্যয় ৪লাখ ৫৮ হাজার ৮৩৫ টাকা বাস্তবে এ ১০ টি কমিউনিটি সেন্টার ও ছয়টি ঘাটলার কোনো কাজ না করে, মোট ১ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩৫ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সারিকা ট্রেডার্স তুলে নেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থপনা অধিদপ্তরাধীন এর এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে সময়ের বার্তাকে বলেন,পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা,উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে ১ কোটি ১২ লাখ৭৫হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন এবং ২০২০ সালের জুলাই মাসের ২৩ তারিখ সরকারী হিসাবে জমা প্রদান করেছেন যা সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা,২০১৮ এর ৩ (খ) এবং (ঘ) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় গত বছরের আগস্ট মাসের ৮ তারিখ চাকরী হতে সামরিক বরখাস্তর পাশাপাশী তপন কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে মামলটি তদন্তাধীন আছেন।