স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায় পুড়িয়ে হত্যা করা হয় দুই সন্তানের জননী ইসরাত জাহান ইমাকে। হিজলার রহস্যঘেরা চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ ইসরাত জাহান ইমা হত্যার নয় মাসেও আদালতে তদান্ত প্রতিবেদন জমাদেন নাই পুলিশ। মামলার বাদী ও নিহত ইসরাত জাহান ইমার বাবা মো: শফিকুল ইসলাম মাসুম বলছেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে হিজলা থানায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ প্রথমে বলেছেন ময়না তদন্তর রিপোর্ট আসলেই তদান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেবেন।
গত বছরের নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখ ময়না তদান্তর রিপোর্ট আসার পরেও পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক মনে করছেন মামলার বাদী মো: শফিকুল ইসলাম মাসুম। বাদী বলেন, তদান্তকারী কর্মকর্তা এসআই তারেক, গত পনের দিন পূর্বে আসামীদের বিরুদ্ধে তদান্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা আদালতে। অধ্যবধি তদান্ত প্রতিবেদন জমা দেন নাই এসআই তারেক। হত্যা মামলার ১নং আসামী রহস্যজনক কারনে এখনো জামিন ছাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
বাদী আরো বলেন, মেয়েকে যারা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন তাদের সঠিক বিচার চাই। মেয়ে হত্যার দ্রুত বিচার চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যাতে মেয়ে হত্যার প্রকৃত হত্যাকারীর বিচার হয়।
গত বছরের ১১ জুন হিজলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের খুন্না গবিন্দপুর ট্যাকের বাজারের ব্যবসায়ী মহসিন রেজার স্ত্রী দুই সন্তানের জননী গৃহবধূ ইসরাত জাহান ইমা আগুনে দগ্ধ হন। ওই দিনই ইমাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স এবং পরবর্তীতে ে ২য় পৃষ্ঠায় দেখুনবরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি ঘটলে একই দিন রাতে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প¬াস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ জুন মৃত্যুবরণ করেন ইসরাত জাহান ইমা। মৃত্যুর পরে আইনী প্রক্রিয়ায় পরিবারের ইচ্ছাতেই ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের অনুমতি দেয় ঢাকার শাহবাগ থানা পুলিশ। ফলে ওই দিনই ইমার মৃতদেহ হিজলায় নিয়ে দাফন করা হয়।
যদিও ইমার পরিবারের অভিযোগ, তাদের বিভিন্ন অপপ্রচার এবং ভুল বুঝিয়ে লাশ ময়না তদন্ত ছাড়াই ঢাকা থেকে হিজলায় এনে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করা হয়েছে। দাফনের কদিন না যেতেই মৃত্যুর পূর্বে ইমার স্বীকারক্তিমূলক একটি ভিডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়ে যায়।
৭ মিনিট ৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিও রেকর্ডে বলা হয় তাকে হাত-পা বেঁধে মারধর এবং অচেতন করে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন স্বামী।
এর পর পরই একই বছরের ২১ জুন হিজলা থানায় ইমার স্বামী মহসিন রেজা ও রেজার পরকীয় প্রেমিকা শাহনাজ বেগম, ভাসুর মোস্তফা ও শ্বশুর দেলোয়ার হোসেন বেপারী সহ মোট ৪ জনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত ইসরাত জাহান ইমার বাবা মো: সফিকুল ইসলাম মাসুম।
মামলার তদান্তকারী কর্মকর্তা এসআই তারেক সময়ের বার্তাকে বলেন, ইতোপূর্বে ময়না তদান্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছেন। মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়াতে একটু সময় নিচ্ছি।
তবে দ্রুত তদান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হবে। মামলার ১নং পলাতক আসামী মহসিন রেজাকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যহৃত আছে।